সূরা আল গাশিয়াহ বাংলা উচ্চারণ, অর্থ, ফজিলত, আরবি ও অডিওসহ

সূরা আল গাশিয়াহ বাংলা উচ্চারণ, আরবি উচ্চারন বাংলায় অনেক সময় ভুল থাকে। তাই আপনাদের সবাইকে অনুরোধ করছি, যখন বাংলায় উচ্চারন শিখবেন তখন অবশ্যই আরবির সাথে মিলিয়ে নিবেন। আর যদি কেউ আরবি দেখে পড়তে না পারেন তাহলে অবশ্যই অডিও শোনে বাংলার সাথে মিলিয়ে নিবেন। ধন্যবাদ সবাইকে

সূরা আল গাশিয়াহ
সূরা আল গাশিয়াহ

অডিও

সূরা আল গাশিয়াহ বাংলা উচ্চারণ, অর্থ,

  1. هَلْ أَتَىٰكَ حَدِيثُ ٱلْغَٰشِيَةِ
    হাল আতা-কা হাদীছুল গা-শিয়াহ।
    আপনার কাছে আচ্ছন্নকারী কেয়ামতের বৃত্তান্ত পৌঁছেছে কি?
    Has the story reached thee of the overwhelming (Event)?
  2. وُجُوهٌ يَوْمَئِذٍ خَٰشِعَةٌ
    উজূহুইঁ ইয়াওমাইযিন খা-শি‘আহ।
    অনেক মুখমন্ডল সেদিন হবে লাঞ্ছিত,
    Some faces, that Day, will be humiliated,
  3. عَامِلَةٌ نَّاصِبَةٌ
    আ-মিলাতুন না-সিবাহ।
    ক্লিষ্ট, ক্লান্ত।
    Labouring (hard), weary,-
  4. تَصْلَىٰ نَارًا حَامِيَةً
    তাসলা-না-রান হা-মিয়াহ।
    তারা জ্বলন্ত আগুনে পতিত হবে।
    The while they enter the Blazing Fire,-
  5. تُسْقَىٰ مِنْ عَيْنٍ ءَانِيَةٍ
    তুছকা-মিন ‘আইনিন আ-নিয়াহ।
    তাদেরকে ফুটন্ত নহর থেকে পান করানো হবে।
    The while they are given, to drink, of a boiling hot spring,
  6. لَّيْسَ لَهُمْ طَعَامٌ إِلَّا مِن ضَرِيعٍ
    লাইছা লাহুম তা‘আ-মুন ইল্লা-মিন দারী‘ই।
    কন্টকপূর্ণ ঝাড় ব্যতীত তাদের জন্যে কোন খাদ্য নেই।
    No food will there be for them but a bitter Dhari’
  7. لَّا يُسْمِنُ وَلَا يُغْنِى مِن جُوعٍ
    লা-ইউছমিনুওয়ালা-ইউগনী মিন জু‘ই।
    এটা তাদেরকে পুষ্ট করবে না এবং ক্ষুধায়ও উপকার করবে না।
    Which will neither nourish nor satisfy hunger.
  8. وُجُوهٌ يَوْمَئِذٍ نَّاعِمَةٌ
    উজূহুইঁ ইয়াওমাইযিন না-‘ইমাহ।
    অনেক মুখমন্ডল সেদিন হবে, সজীব,
    (Other) faces that Day will be joyful,
  9. لِّسَعْيِهَا رَاضِيَةٌ
    লিছা‘ইহা-রা-দিয়াহ।
    তাদের কর্মের কারণে সন্তুষ্ট।
    Pleased with their striving,-
  10. فِى جَنَّةٍ عَالِيَةٍ
    ফী জান্নাতিন ‘আ-লিয়াহ।
    তারা থাকবে, সুউচ্চ জান্নাতে।
    In a Garden on high,
  11. لَّا تَسْمَعُ فِيهَا لَٰغِيَةً
    লা-তাছমা‘উ ফীহা-লা-গিয়াহ।
    তথায় শুনবে না কোন অসার কথাবার্তা।
    Where they shall hear no (word) of vanity:
  12. فِيهَا عَيْنٌ جَارِيَةٌ
    ফীহা-‘আইনুন জা-রিয়াহ।
    তথায় থাকবে প্রবাহিত ঝরণা।
    Therein will be a bubbling spring:
  13. فِيهَا سُرُرٌ مَّرْفُوعَةٌ
    ফীহা-ছুরুরুমমারফূ‘আহ।
    তথায় থাকবে উন্নত সুসজ্জিত আসন।
    Therein will be Thrones (of dignity), raised on high,
  14. وَأَكْوَابٌ مَّوْضُوعَةٌ
    ওয়া আকওয়া-বুম মাওদূ‘আহ।
    এবং সংরক্ষিত পানপাত্র
    Goblets placed (ready),
  15. وَنَمَارِقُ مَصْفُوفَةٌ
    ওয়া নামা-রিকুমাসফূফাহ।
    এবং সারি সারি গালিচা
    And cushions set in rows,
  16. وَزَرَابِىُّ مَبْثُوثَةٌ
    ওয়া ঝারা-বিইয়ুমাবছূছাহ।
    এবং বিস্তৃত বিছানো কার্পেট।
    And rich carpets (all) spread out.
  17. أَفَلَا يَنظُرُونَ إِلَى ٱلْإِبِلِ كَيْفَ خُلِقَتْ
    আফালা-ইয়ানজু রুনা ইলাল ইবিলি কাইফা খুলিকাত।

    তারা কি উষ্ট্রের প্রতি লক্ষ্য করে না যে, তা কিভাবে সৃষ্টি করা হয়েছে?
    Do they not look at the Camels, how they are made?-
  18. وَإِلَى ٱلسَّمَآءِ كَيْفَ رُفِعَتْ
    ওয়া ইলাছ ছামাই কাইফা রুফি‘আত।
    এবং আকাশের প্রতি লক্ষ্য করে না যে, তা কিভাবে উচ্চ করা হয়েছে?
    And at the Sky, how it is raised high?-
  19. وَإِلَى ٱلْجِبَالِ كَيْفَ نُصِبَتْ
    ওয়া ইলাল জিবা-লি কাইফা নুসিবাত।

    এবং পাহাড়ের দিকে যে, তা কিভাবে স্থাপন করা হয়েছে?
    And at the Mountains, how they are fixed firm?
  20. وَإِلَى ٱلْأَرْضِ كَيْفَ سُطِحَتْ
    ওয়া ইলাল আরদি কাইফা ছুতিহাত।
    এবং পৃথিবীর দিকে যে, তা কিভাবে সমতল বিছানো হয়েছে?
    And at the Earth, how it is spread out?
  21. فَذَكِّرْ إِنَّمَآ أَنتَ مُذَكِّرٌ
    ফাযাক্কির ইন্নামাআনতা মুযাক্কির।
    অতএব, আপনি উপদেশ দিন, আপনি তো কেবল একজন উপদেশদাতা,
    Therefore do thou give admonition, for thou art one to admonish.
  22. لَّسْتَ عَلَيْهِم بِمُصَيْطِرٍ
    লাছাতা ‘আলইহিম বিমুসাইতির।
    আপনি তাদের শাসক নন,
    Thou art not one to manage (men’s) affairs.
  23. إِلَّا مَن تَوَلَّىٰ وَكَفَرَ
    ইল্লা-মান তাওয়াল্লা-ওয়া কাফার।
    কিন্তু যে মুখ ফিরিয়ে নেয় ও কাফের হয়ে যায়,
    But if any turn away and reject Allah,
  24. فَيُعَذِّبُهُ ٱللَّهُ ٱلْعَذَابَ ٱلْأَكْبَرَ
    ফাইউ‘আযযিবুহুল্লা-হুল ‘আযা-বাল আকবার।
    আল্লাহ তাকে মহা আযাব দেবেন।
    Allah will punish him with a mighty Punishment,
  25. إِنَّ إِلَيْنَآ إِيَابَهُمْ
    ইন্না ইলাইনাইয়া-বাহুম।
    নিশ্চয় তাদের প্রত্যাবর্তন আমারই নিকট,
    For to Us will be their return;
  26. ثُمَّ إِنَّ عَلَيْنَا حِسَابَهُم
    ছু ম্মা ইন্না ‘আলাইনা-হিছা-বাহুম।
    অতঃপর তাদের হিসাব-নিকাশ আমারই দায়িত্ব।
    Then it will be for Us to call them to account.

More……..

সূরা আসর বাংলা উচ্চারণ, অর্থ, ফজিলত

আয়াতুল কুরসির উপকারিতা 

সূরা আল ফাতিহা বাংলা উচ্চারণ, অর্থ, আরবি ও অডিওসহ

সূরা আল নাস বাংলা উচ্চারণ, অর্থ, আরবি ও অডিওসহ

সূরা আল ফালাক বাংলা উচ্চারণ, অর্থ, আরবি ও অডিওসহ

সূরা আল ইখলাস বাংলা উচ্চারণ, অর্থ

সূরা তাকাসুর বাংলা উচ্চারণ, অর্থ, ফজিলত, আরবি

ফজিলত সূরা আল গাশিয়াহ

এর বিষয়বস্তু অনুধাবন করার জন্য একথটি অবশ্যি সামনে রাখতে হবে যে , ইসলাম প্রচারের প্রথম দিকে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রধানত দু’টি কথা লোকদেরকে বুঝাবার মধ্যেই তাঁর দাওয়াত সীমাবব্ধ রাখেন।

একটি তাওহীদ ও দ্বিতীয়টি আখেরাত। আর মক্কাবাসীরা এই দু’টি কথা মেনে নিতে অস্বীকার করতে থাকে। এই পটভূমিটুকু অনুধাবন করার পর এবার এই সূরাটির বিষয়বস্তু ও বর্ণনা পদ্ধতি সম্পর্কে চিন্তা – সূরা আল গাশিয়াহ ভাবনা করুন।

এখানে সবার আগে গাফলতির জীবনে আকণ্ঠ ডুবে থাকা লোকদেরকে চমকে দেবার জন্য হঠাৎ তাদের সামনে প্রশ্ন রাখা হয়েছে : তোমরা কি সে সময়ের কোন খবর রাখো যখন সারা দুনিয়ার ওপর ছেয়ে যাবার মতো একটি বিপদ অবতীর্ণ হবে ?

এরপর সাথে সাথেই এর বিস্তারিত বর্ণনা দেয়া শুরু হয়েছে। বলা হয়েছে , সে সময় সমস্ত মানুষ দু’টি ভিন্ন ভিন্ন দলে বিভক্ত হয়ে দু’টি ভিন্ন পরিণামের সম্মুখীন হবে। একদল জাহান্নামে যাবে।

তাদের উমুক উমুক ধরনের ভয়াবহ ও কঠিন আযাবের সম্মুখীন হতে হবে। দ্বিতীয় দলটি উন্নত ও উচ্চ মর্যাদার জান্নাতে যাবে। তাদেরকে উমুক উমুক ধরনের নিয়ামত দান করা হবে।

এভাবে লোকদেরকে চমকে দেবার পর হঠাৎ বিষয়বস্তু পরিবর্তিত হয়ে যায়। প্রশ্ন করা হয় , যারা কুরআনের তাওহীদী শিক্ষা ও আখেরাতের খবর শুনে নাম সিটকায় তারা কি নিজেদের চোখের সামনে প্রতি মুহূর্তে যেসব ঘটনা ঘটে যাচ্ছে সেগুলো দেখে না ?

সূরা আল গাশিয়াহ আরবের দিগন্ত বিস্তৃত সাহারায় যেসব উটের ওপর তাদের সমগ্র জীবন যাপন প্রণালী র্ভিরশীল তারা কিভাবে ঠিক মরু জীবনের উপযোগী বৈশিষ্ট ও গুণাবলী সম্পন্ন পশু হিসেবে গড়ে উঠেছে , একথা কি তারা একটুও চিন্তা করে না ? পথে সফর করার সময় তারা আকাশ , পাহাড় বা বিশাল বিস্তৃত পৃথিবী দেখে ।

এই তিনটি জিনিস সম্পর্কেই তারা চিন্তা করে না কেন ? মাথার ওপরে এই আকাশটি কেমন করে ছেয়ে গেলো ? সামনে ওই পাহাড় খাড়া হলো কেমন করে ? পায়ের নীচে এই যমীন কিভাবে বিছানো হলো ? এসব কিছুই কি একজন মহাবিজ্ঞ সর্বশক্তিমান কারিগরের কারিগরী তৎপরতা ছাড়াই হয়ে গেছে ? যদি একথা মেনে নেয়া হয় যে ,

একজন সৃষ্টিকর্তা বিপুল শক্তি ও জ্ঞানের সাহায্যে এই জিনিসগুলো তৈরি করেছেন এবং দ্বিতীয় আর কেউ তাঁর এই সৃষ্টি কর্মে শরীক নেই তাহলে তাঁকেই একক রব হিসেবে মেনে নিতে তাদের আপত্তি কেন ?

সূরা আল গাশিয়াহ আর যদি তারা একথা মেনে নিয়ে থাকে যে সেই আল্লাহর এসব কিছু সৃষ্টি করার ক্ষমতা ছিল , তাহলে সেই আল্লাহ কিয়ামত সংঘটিত করার ক্ষমতাও রাখেন , মানুষের পুর্নবার সৃষ্টি করার ক্ষমতাও রাখেন এবং জান্নাত ও জাহান্নাম বানাবার ক্ষমতাও রাখেন — এসব কথা কোন যুক্তি প্রমাণের ভিত্তিতে মানতে ইতস্তত করছে ?

এ সংক্ষিপ্ত ও অত্যন্ত শক্তিশালী যুক্তি প্রমানের ভিত্তিতে বক্তব্য বুঝানো হয়েছে। এরপর কাফেরদের দিক থেকে ফিরে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে সম্বোধন করা হেয়েছে । তাঁকে বলা হয়েছে ,

এরা না মানতে চাইলে না মানুক , তোমাকে তো এদের ওপর বল প্রয়োগকারী হিসেবে নিযুক্ত করা হয়নি । তুমি জোর করে এদের থেকে স্বীকৃতি আদায় করতে পারো না। তোমার কাজ উপদেশ দেয়া। কাজেই তুমি উপদেশ দিয়ে যেতে থাকো। সবশেষে তাদের অবশ্যি আমার কাছেই আসতে হবে । সে সময় আমি তাদের কাছ থেকে পুরো হিসেব নিয়ে নেব। যারা মানেনি তাদেরকে কঠিন শাস্তি দেবো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *