সূরা ক্বারিয়াহ বাংলা উচ্চারণ, অর্থ, ফজিলত, আরবি ও অডিওসহ

ফজিলত

সূরা আল কারিয়াহ বা সূরা ক্বারিয়াহ পবিত্র কুরআনের 101 তম সূরা। সূরাটির আয়াত সংখ্যা 11। সূরাটি মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছিল তাই এটি মক্কী সূরাগুলির অন্তর্ভুক্ত। সূরাটি মুসলিম জাতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কারণ এই সূরায় সর্বশক্তিমান আল্লাহ কিয়ামত ও পরকাল সম্পর্কে কথা বলেছেন।

ক্বারিয়াহ শব্দের অর্থ হত্যাকারী। এই সূরার শুরুতে মানুষকে ‘মহা বিপর্যয়’ সম্পর্কে সতর্ক করা হয়েছে। আর এই মহা দুর্ঘটনা কিয়ামত। এই সূরার শেষ আয়াতে আল্লাহ বলেছেন মানুষের ভালো-মন্দ কাজের হিসাব নিতে। যাদের নেক আমলের পাল্লা ভারী তারা জান্নাতে এবং যাদের মন্দ কাজের পাল্লা ভারী তারা হবে জাহান্নামে।

সূরা ক্বারিয়াহ mp3 ডাউনলোড

সূরা ক্বারিয়াহ

(1) ٱلْقَارِعَةُ
উচ্চারণঃ আল কা-রি‘আহ।
অর্থঃ করাঘাতকারী,
The (Day) of Noise and Clamour:

(2) مَا ٱلْقَارِعَةُ
উচ্চারণঃ মাল কা-রি‘আহ।
অর্থঃ করাঘাতকারী কি?
What is the (Day) of Noise and Clamour?

(3) وَمَآ أَدْرَىٰكَ مَا ٱلْقَارِعَةُ
উচ্চারণঃ ওয়ামাআদরা-কা মাল কা-রি‘আহ।
অর্থঃ করাঘাতকারী সম্পর্কে আপনি কি জানেন ?
And what will explain to thee what the (Day) of Noise and Clamour is?

(4) يَوْمَ يَكُونُ ٱلنَّاسُ كَٱلْفَرَاشِ ٱلْمَبْثُوثِ
উচ্চারণঃ ইয়াওমা ইয়াকূনুন্না-ছুকাল ফারা-শিল মাবছূছ।
অর্থঃ যেদিন মানুষ হবে বিক্ষিপ্ত পতংগের মত
(It is) a Day whereon men will be like moths scattered about,

(5) وَتَكُونُ ٱلْجِبَالُ كَٱلْعِهْنِ ٱلْمَنفُوشِ
উচ্চারণঃ ওয়া তাকূনুল জিবা-লুকাল‘ইহনিল মানফূশ।
অর্থঃ এবং পর্বতমালা হবে ধুনিত রঙ্গীন পশমের মত।
And the mountains will be like carded wool.

(6) فَأَمَّا مَن ثَقُلَتْ مَوَٰزِينُهُۥ
উচ্চারণঃ ফাআম্মা-মান ছাকুলাত মাওয়া-ঝীনুহূ।
অর্থঃ অতএব যার পাল্লা ভারী হবে,
Then, he whose balance (of good deeds) will be (found) heavy,

(7) فَهُوَ فِى عِيشَةٍ رَّاضِيَةٍ
উচ্চারণঃ ফাহুওয়া ফী ‘ঈশাতির রা-দিয়াহ।
অর্থঃ সে সুখীজীবন যাপন করবে।
Will be in a life of good pleasure and satisfaction.

(8) وَأَمَّا مَنْ خَفَّتْ مَوَٰزِينُهُۥ
উচ্চারণঃ ওয়া আম্মা-মান খাফফাত মাওয়াঝীনুহূ
অর্থঃ আর যার পাল্লা হালকা হবে,
But he whose balance (of good deeds) will be (found) light,-

(9) فَأُمُّهُۥ هَاوِيَةٌ
উচ্চারণঃ ফাউম্মুহূহা-বিইয়াহ।
অর্থঃ তার ঠিকানা হবে হাবিয়া।
Will have his home in a (bottomless) Pit.

(10) وَمَآ أَدْرَىٰكَ مَا هِيَهْ
উচ্চারণঃ ওয়ামাআদরা-কা মা-হিয়াহ।
অর্থঃ আপনি জানেন তা কি?
And what will explain to thee what this is?

(11) نَارٌ حَامِيَةٌۢ
উচ্চারণঃ না-রুন হা-মিয়াহ।
অর্থঃ প্রজ্জ্বলিত অগ্নি!
(It is) a Fire Blazing fiercely!

সূরা আসর বাংলা উচ্চারণ, অর্থ, ফজিলত

আয়াতুল কুরসির উপকারিতা 

সূরা আল ফাতিহা বাংলা উচ্চারণ, অর্থ, আরবি ও অডিওসহ

সূরা আল নাস বাংলা উচ্চারণ, অর্থ, আরবি ও অডিওসহ

সূরা আল ফালাক বাংলা উচ্চারণ, অর্থ, আরবি ও অডিওসহ

সূরা আল ইখলাস বাংলা উচ্চারণ, অর্থ

সূরা তাকাসুর বাংলা উচ্চারণ, অর্থ, ফজিলত, আরবি

সূরা ক্বারিয়াহ বাংলা

সূরা ক্বারিয়াহ তাফসীর

আয়াত 1-3
সূরা ক্বারিয়াহ ,আপনি কি জানেন মহাপ্লাবন কি? এখানে উত্তরের জন্য প্রশ্ন করা হয় না। বরং প্রশ্ন করার দ্বারা কেয়ামতের ভয়াবহতা বোঝানো হয়েছে। কিয়ামতের ভয়াবহতা কেমন হবে তা মানুষ অনুমান করতে পারে না। তাই এর কিছু নিদর্শন নিচের আয়াতে বর্ণিত হয়েছে।

আয়াত-4
কেয়ামতের দিন এমন হবে যেদিন মানুষ বিক্ষিপ্ত পতঙ্গের মত হয়ে যাবে। সূরা ক্বারিয়াহ বিভিন্ন কারণে পতঙ্গের সাথে তুলনা করলে, পতঙ্গরা যেমন অস্থির ও অস্থিরভাবে চারপাশে ঝাঁক বেঁধে বেড়ায়, তেমনি পৃথিবীর সমস্ত মানুষ এক মাঠে জড়ো হবে। পতঙ্গের মত শক্তিহীন ও দুর্বল হয়ে পড়বে। এবং অস্থির এবং উদ্বিগ্নভাবে চারপাশে দৌড়াবে। তবে এ অবস্থা থেকে মুমিনরা নিরাপদ থাকবে।

আয়াত-5
পশম যেমন টুকরো টুকরো হয়ে সব দিকে উড়ে যায়, তেমনি শিং ফুঁক দিলেই পর্বতগুলোও টুকরো টুকরো হয়ে উড়ে যায়। সূরা ক্বারিয়াহ আল্লাহ কিয়ামতের দিন পাহাড়ের অবস্থা ধোয়া পশমের দ্বারা ব্যাখ্যা করেছেন। তখন মানুষের কী অবস্থা হবে, তা সহজেই বোঝা যায়। ধ্বংস তাদের জন্য যারা এত সুন্দর করে বোঝানোর পরও সঠিক পথে চলে না।

আয়াত-6
অতঃপর যার নেক আমলের ওজন বেশি সে জাহান্নাম থেকে রক্ষা পাবে। আমলের ওজন হবে আন্তরিকতা, তাকওয়া ও আন্তরিকতার উপর।

আয়াত-7
এবং সে একটি তৃপ্তিপূর্ণ জীবন পাবে। চিরস্থায়ী জান্নাত হবে তার নিরাপদ আবাস।

আয়াত-8-9.
আর যার হালকা আমল আছে বা যার কাফের-মুশরিকের মত নেক আমল নেই, তার আবাস হবে হাবিয়া। হাবিয়া হল জ্বলন্ত আগুন বা জাহান্নামের নিম্ন স্তর। যার হাল্কা কাল হবে, জ্বলন্ত আগুন বা জাহান্নামের সর্বনিম্ন স্তর হবে তার আশ্রয়স্থল।

ام অর্থঃ মা। মা আশ্রয়। তাই ام অর্থ এখানে আশ্রয়। হযরত ইবনে আব্বাস রা. তিনি বলেন, মায়ের কোলে সন্তানের আশ্রয় যেমন জাহান্নাম হবে কাফিরদের আবাস। সূরা আল ক্বারিয়ায় কাজের ওজন এবং এর হালকাতা ও ভারীতার মাধ্যমে জাহান্নাম বা জান্নাত লাভের বিষয়টি আলোচনা করা হয়েছে। পিরিয়ডের ওজন হবে দ্বিগুণ।

একবার ওজন করা হলে মুমিন ও কাফেরদের মধ্যে পার্থক্য নির্ণয় করা হবে। অতঃপর দ্বিতীয় ওজন হবে ঈমানদারদের মধ্যে সৎকাজ ও অন্যায় কাজের পার্থক্য করার জন্য। এই সূরায় স্পষ্টতই প্রথম ওজন বোঝানো হয়েছে। তাফসীরে মাজহারীতে, কোরান সাধারণত কাফের ও ধার্মিক মুমিনদের শাস্তি ও পুরস্কার বর্ণনা করে। মুমিনদের মধ্যে যারা ভালো ও মন্দ মিশ্রিত কাজ করে, কোরানে সাধারণত তাদের দানকে বিশদভাবে বিশ্লেষণ করে না।

এ ক্ষেত্রে আরেকটি বিষয় জানা দরকার, বিচারের দিন মানুষের আমল ওজন করা হবে, গণনা করা হবে না। আমলের ওজন- ইখলাস অর্থাৎ আন্তরিক ও সুন্নাতের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ, সংখ্যায় কম হলেও তার আমলের ওজন বেশি হবে। পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি প্রচুর পরিমাণে নামাজ-রোজা, দান-খয়রাত, হজ-ওমরাহ পালন করে কিন্তু সুন্নাতের সাথে কম সামঞ্জস্যপূর্ণ, আন্তরিকতা ও তাকওয়া নেই, তার আমলের ওজন কম হবে।

আয়াত-10-11.
আপনি কি জানেন যে কি? হাবিয়া কি?
এটি একটি খুব জ্বলন্ত আগুন। জাহান্নামের গভীরে যন্ত্রণার ভয়াবহতা কেউ বুঝতে পারে না। তাহলে বুঝুন এই আগুনের তীব্রতা এত বেশি যে পৃথিবীর কোনো আগুনই এর সাথে তুলনা করতে পারে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *