সূরা বাইয়্যিনাহ বাংলা উচ্চারণ, অর্থ, ফজিলত, আরবি ও অডিওসহ

সূরা বাইয়্যিনাহ বাংলা উচ্চারণ, আরবি উচ্চারন বাংলায় অনেক সময় ভুল থাকে। তাই আপনাদের সবাইকে অনুরোধ করছি, যখন বাংলায় উচ্চারন শিখবেন তখন অবশ্যই আরবির সাথে মিলিয়ে নিবেন। আর যদি কেউ আরবি দেখে পড়তে না পারেন তাহলে অবশ্যই অডিও শোনে বাংলার সাথে মিলিয়ে নিবেন। ধন্যবাদ সবাইকে

সূরা বাইয়্যিনাহ অডি Download

সূরা বাইয়্যিনাহ
সূরা বাইয়্যিনাহ

সূরা বাইয়্যিনাহ বাংলা উচ্চারণ

  1. لَمْ يَكُنِ ٱلَّذِينَ كَفَرُوا۟ مِنْ أَهْلِ ٱلْكِتَٰبِ وَٱلْمُشْرِكِينَ مُنفَكِّينَ حَتَّىٰ تَأْتِيَهُمُ ٱلْبَيِّنَةُ
    লাম ইয়াকুনিল্লাযীনা কাফারূমিন আহলিল কিতা-বি ওয়াল মুশরিকীনা মুনফাক্কীনা হাত্তাতা’তিয়াহুমুল বাইয়িনাহ।
    আহলে-কিতাব ও মুশরেকদের মধ্যে যারা কাফের ছিল, তারা প্রত্যাবর্তন করত না যতক্ষণ না তাদের কাছে সুস্পষ্ট প্রমাণ আসত।
    Those who reject (Truth), among the People of the Book and among the Polytheists, were not going to depart (from their ways) until there should come to them Clear Evidence,-
  2. رَسُولٌ مِّنَ ٱللَّهِ يَتْلُوا۟ صُحُفًا مُّطَهَّرَةً
    রাছূলুম মিনাল্লা-হি ইয়াতলূসুহুফাম মুতাহহারাহ।
    অর্থাৎ আল্লাহর একজন রসূল, যিনি আবৃত্তি করতেন পবিত্র সহীফা,
    An messenger from Allah, rehearsing scriptures kept pure and holy:
  3. فِيهَا كُتُبٌ قَيِّمَةٌ
    ফীহা-কুতুবুন কাইয়িমাহ।
    যাতে আছে, সঠিক বিষয়বস্তু।
    Wherein are laws (or decrees) right and straight.
  4. وَمَا تَفَرَّقَ ٱلَّذِينَ أُوتُوا۟ ٱلْكِتَٰبَ إِلَّا مِنۢ بَعْدِ مَا جَآءَتْهُمُ ٱلْبَيِّنَةُ
    ওয়ামা- তাফাররাকাল্লাযীনা ঊতুলকিতা-বা ইল্লা- মিম বা‘দি মা- জাআতহুমুল বাইয়িনাহ।
    অপর কিতাব প্রাপ্তরা যে বিভ্রান্ত হয়েছে, তা হয়েছে তাদের কাছে সুস্পষ্ট প্রমাণ আসার পরেই।
    Nor did the People of the Book make schisms, until after there came to them Clear Evidence.
  5. وَمَآ أُمِرُوٓا۟ إِلَّا لِيَعْبُدُوا۟ ٱللَّهَ مُخْلِصِينَ لَهُ ٱلدِّينَ حُنَفَآءَ وَيُقِيمُوا۟ ٱلصَّلَوٰةَ وَيُؤْتُوا۟ ٱلزَّكَوٰةَ وَذَٰلِكَ دِينُ ٱلْقَيِّمَةِ
    ওয়ামাউমিরূইল্লা-লিয়া‘বুদুল্লা-হা মুখলিসীনা লাহুদ্দীনা হুনাফাআ ওয়া ইউকীমুসসালা-তা ওয়া ইউ’তুঝঝাকা-তা ওয়া যা-লিকা দীনুল কাইয়িমাহ।

তাদেরকে এছাড়া কোন নির্দেশ করা হয়নি যে, তারা খাঁটি মনে একনিষ্ঠভাবে আল্লাহর এবাদত করবে, নামায কায়েম করবে এবং যাকাত দেবে। এটাই সঠিক ধর্ম। And they have been commanded no more than this:

To worship Allah, offering Him sincere devotion, being true (in faith); to establish regular prayer; and to practise regular charity; and that is the Religion Right and Straight.

  1. إِنَّ ٱلَّذِينَ كَفَرُوا۟ مِنْ أَهْلِ ٱلْكِتَٰبِ وَٱلْمُشْرِكِينَ فِى نَارِ جَهَنَّمَ خَٰلِدِينَ فِيهَآ أُو۟لَٰٓئِكَ هُمْ شَرُّ ٱلْبَرِيَّةِ
    ইন্নাল্লাযীনা কাফারূমিন আহলিল কিতা-বি ওয়াল মুশরিকীনা ফী না-রি জাহান্নামা খা-লিদীনা ফীহা- উলাইকা হুম শাররুল বারিইইয়াহ।
    আহলে-কিতাব ও মুশরেকদের মধ্যে যারা কাফের, তারা জাহান্নামের আগুনে স্থায়ীভাবে থাকবে। তারাই সৃষ্টির অধম।
    Those who reject (Truth), among the People of the Book and among the Polytheists, will be in Hell-Fire, to dwell therein (for aye). They are the worst of creatures.
  2. إِنَّ ٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ وَعَمِلُوا۟ ٱلصَّٰلِحَٰتِ أُو۟لَٰٓئِكَ هُمْ خَيْرُ ٱلْبَرِيَّةِ
    ইন্নাল্লাযীনা আ-মানূওয়া ‘আমিলুসসা-লিহা-তি উলাইকা হুম খাইরুল বারিইইয়াহ।
    যারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে, তারাই সৃষ্টির সেরা।
    Those who have faith and do righteous deeds,- they are the best of creatures.
  3. جَزَآؤُهُمْ عِندَ رَبِّهِمْ جَنَّٰتُ عَدْنٍ تَجْرِى مِن تَحْتِهَا ٱلْأَنْهَٰرُ خَٰلِدِينَ فِيهَآ أَبَدًا رَّضِىَ ٱللَّهُ عَنْهُمْ وَرَضُوا۟ عَنْهُ ذَٰلِكَ لِمَنْ خَشِىَ رَبَّهُۥ
    জাঝাউহুম ‘ইনদা রাব্বিহিম জান্না-তু‘আদনিন তাজরী মিন তাহতিহাল আনহা-রু খা-লিদীনা ফীহাআবাদার রাদিয়াল্লা-হু ‘আনহুম ওয়া রাদূ ‘আনহু যা-লিকা লিমান খাশিয়া রাব্বাহ।
    তাদের পালনকর্তার কাছে রয়েছে তাদের প্রতিদান চিরকাল বসবাসের জান্নাত, যার তলদেশে নির্ঝরিণী প্রবাহিত। তারা সেখানে থাকবে অনন্তকাল। আল্লাহ তাদের প্রতি সন্তুষ্ট এবং তারা আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্ট। এটা তার জন্যে, যে তার পালনকর্তাকে ভয় কর। Their reward is with Allah: Gardens of Eternity, beneath which rivers flow; they will dwell therein for ever; Allah well pleased with them, and they with Him: all this for such as fear their Lord and Cherisher.

More……..

সূরা আসর বাংলা উচ্চারণ, অর্থ, ফজিলত

আয়াতুল কুরসির উপকারিতা 

সূরা আল ফাতিহা বাংলা উচ্চারণ, অর্থ, আরবি ও অডিওসহ

সূরা আল নাস বাংলা উচ্চারণ, অর্থ, আরবি ও অডিওসহ

সূরা আল ফালাক বাংলা উচ্চারণ, অর্থ, আরবি ও অডিওসহ

সূরা আল ইখলাস বাংলা উচ্চারণ, অর্থ

সূরা তাকাসুর বাংলা উচ্চারণ, অর্থ, ফজিলত, আরবি

সূরা বাইয়্যিনাহ নির্দেশনা


১. ইসলামের যেকোনো বিধান কেউ যদি অস্বীকার করে তাহলে তার প্রতিদান হবে খুবই নিকৃষ্ট।

২. সূরা বাইয়্যিনাহ যে ঈমান গ্রহণ করে ইসলামের বিধি-বিধানগুলো খুব দৃঢ়তার সঙ্গে পালন করে, সৎ কাজের আদেশ এবং অসৎ কাজের নিষেধ যথাযথভাবে পালন করে তাহলে তার প্রতিদান হবে আল্লাহ তা’আলার সন্তুষ্টি এবং চিরস্থায়ী জান্নাত ।

৩. শরীয়তের ফরয বিধানগুলো পালন করা এবং নিষিদ্ধ বিধানগুলো বর্জন করা এবং কথায় ও কাজে ঈমান মজবুত রাখার মাধ্যমে আল্লাহ এবং তাঁর রাসূল স.-এর আনুগত্য প্রকাশ করার নামই তাকওয়া বা আল্লাহর ভয়।

সূরা বাইয়্যিনাহ এর তাফসির ও ফজিলত


আয়াত-১.
সূরা বাইয়্যিনাহ রাসূলুল্লাহ স.-এর আগমনের পূর্বে ইহুদী-নাসারা এবং মুশরিকদের মনের কথা উল্লেখ করতে গিয়ে আল্লাহ তা’আলা বলেন, যাদের কাছে আসমানী কোনো কিতাব না থাকায় অগ্নিপূজা, মূর্তিপূজা এবং কুফরী থেকে কখনো পৃথক হতে চাচ্ছিল না, যতক্ষণ না তাদের কাছে সুস্পষ্ট প্রমাণ আসে।

আয়াত-২.
এবং আল্লাহর পক্ষ থেকে একজন রাসূল এসে যতক্ষণ না পবিত্র কুরআন তাদের সামনে তিলওয়াত করেন। ততক্ষণ পর্যন্ত তারা ঈমান গ্রহণ করবে না।

আয়াত-৩.
যাতে আছে সঠিক বিধান। যার জ্ঞান সম্পূর্ণ সত্য এবং সকলের জন্য যথার্থ হয়। এই কথার অর্থ হলো, কাফেরদের কুফরী এতটাই মজবুত যে একজন রাসূলের আগমনের আসমানী কিতাব ছাড়া তাদের হেদায়াত পাওয়া খুবই কঠিন।

আয়াত-৪.
সূরা বাইয়্যিনাহ তারপর যখন তাদের কাছে একজন রাসূল স. এবং কুরআনের আগমন ঘটল তখন তারা (কিতাবীরা) বিদ্বেষবশত রাসূল স. ও কুরআনের বিরোধিতা করতে শুরু করল এবং তারা দুই দলে বিভক্ত হয়ে যায়। একদল বিরুদ্ধাচরণ করেছে। আর একটি দল ন্যায়-নিষ্ঠার সাথে পথ চলেছে এবং ঈমানের ওপর অটল থেকেছে। অথচ দরকার ছিল, যে নবীর প্রতীক্ষায় তারা ছিল, তিনি আগমনের সাথে সাথেই সকলে একসাথে তাঁর প্রতি ঈমান আনা।

আয়াত-৫.
অথচ হযরত ইবরাহিম আ.-এর শরীয়তের মতো সর্বদিক থেকে মুখ ফিরিয়ে একমাত্র আল্লাহর জন্য নামায পড়া, যাকাত দেওয়া ও একনিষ্ঠভাবে ইবাদত করার দরকার ছিল। আর রাসূল স. হযরত ইবরাহিম আ.-এর ধর্মেরই ব্যাখ্যা দিচ্ছেন। তার পরও তারা কেন মুখ ফিরিয়ে নিল, অস্বীকার করল আল্লাহই তা ভালো জানেন।

আয়াত-৬.
নিঃসন্দেহে আহলে কিতাব ও মুশরিক-কাফেররা জাহান্নামের আগুনে স্থায়ীভাবে থাকবে। সেখান থেকে কখনো তারা মুক্তি পাবে না। কারণ সৃষ্টির মধ্যে তারাই সবচেয়ে নিকৃষ্ট জীব । ইমাম রাযী রহ. লেখেন, আলোচ্য আয়াতে কাফের বলে দুই শ্রেণির ব্যক্তি উদ্দেশ্য-

১. আহলে কিতাব তথা ইহুদী-নাসারাদের মধ্যে যারা কাফের রয়েছে, কেননা তারা হযরত ওযায়ের আ. এবং হযরত ঈসা আ.-কে আল্লাহর পুত্র বলে ধারণা করে।

২. মুশরিক, যারা আল্লাহর সাথে শিরক করে মূর্তিপূজা করে। আলোচ্য আয়াতে এই উভয় প্রকার লোককেই কাফের বলা হয়েছে। আর বলা হয়েছে তারা চিরদিন জাহান্নামে থাকবে।

আয়াত-৭.
নিঃসন্দেহে যারা আল্লাহ তা’আলা, সমস্ত নবী-রাসূল এবং আসমানী কিতাবসমূহের ওপর ঈমান এনেছে। সাথে সাথে কিতাবের বর্ণিত বিধান অনুপাতে নেক আমল করেছে সৃষ্টিজগতের মধ্যে তারাই সর্বশ্রেষ্ঠ সৃষ্টি এবং সর্বশ্রেষ্ঠ জাতি।

আয়াত-৮.
এই আয়াতে জান্নাতিদের সর্ববৃহৎ নিয়ামত আল্লাহর সন্তুষ্টি পাওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। আল্লাহ তো বান্দাদের প্রতি সন্তুষ্ট হবেনই, বান্দাও আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্ট হবে। এর অর্থ হলো, বান্দার কোনো চাওয়া-পাওয়া অপূর্ণ থাকবে না। যেমন-জান্নাতে তাদের প্রতিপালক আল্লাহর নিকট পাবে তাদের প্রতিদান হিসেবে অবস্থানের জন্য এমন ” বাগানসমূহ, যার তলদেশে নহর প্রবাহিত হয়। এই নিয়ামত তাদের জন্যই, যারা প্রকৃত অর্থে আল্লাহকে ভয় করে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *